স্ত্রী বললেন, 'স্বামী আমাকে সুখী করতে পারে্ন না, সুখী নিজে হতে হয় !!!
সাইফুল হোসেন, লেখক
" একবার একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল সম্পদ অর্জনের গোপন সূত্র নিয়ে আলোচনা করার জন্য। সাথে আমার স্ত্রীও আমন্ত্রিত হয়েছিলেন। আমি সেখানে আমার মূল আলোচনার সাথে সুখের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করি। লোকজন দারুনভাবে আলোড়িত হন। তারপর কর্তৃপক্ষ আমার স্ত্রীকে অনুরোধ করেন কিছু বলার জন্য। উনি কোন প্রস্তুতি ছাড়াই সেখানে গেছেন। তারপরও কিছু বলতে দাঁড়ান। আমি তখন সামনের দর্শকশারীর প্রথম দিকে বসেছি। উনি দাঁড়িয়ে কথা বলা শুরু করছেন। হঠাৎ একজন বয়স্ক শ্রোতা, উনি সম্ভবত ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হবেন, দাঁড়িয়ে আমার স্ত্রীকে একটা প্রশ্ন করলেন। প্রশ্নটি ছিল, আপনার স্বামী মিঃ রিসম্যান কি আপনাকে সুখী করতে পেরেছেন? প্রশ্নটি শুনে আমার স্ত্রী মৃদু হাসলেন। হাসির উত্তর কি বোঝা গেলনা। হ্যাঁ হতে পারে আবার না’ও হতে পারে। আমি একটু দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়ে গেলাম। ভেবেছিলাম যদি উত্তরে উনি হ্যাঁ বলেন তাহলে তো আমি বাঁচলাম আর যদি না বলেন, তখন? আমি আমার কাছাকাছি বের হবার দরজাটা দেখে রাখলাম যেন পরিস্থিতি সেরকম হলে দ্রুত কেটে পড়তে পারি। আমার স্ত্রী উত্তর শুরু করলেন।
- আমি খুব খুশী হয়েছি এমন একটা প্রশ্ন করার জন্য। আমার স্বামী মিঃ রিসম্যান একটু আগে কথা বলে গেলেন। আসলে উনিই এখানে আজ আমন্ত্রিত বক্তা, আমি শ্রোতা হিসেবে এসেছি। আমাকে কিছু কথা বলার সুযোগ দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ। আমার স্বামী আমার দেখা ভালো মানুষদের অন্যতম। তিনি তাঁর জীবনের বড় যেসব সিদ্ধান্ত, আমার সাথে আলাপ আলোচনা করেই নেন, আর্থিক কোন সিদ্ধান্ত নেবার আগে অবশ্যই আমার সাথে পরামর্শ করে নেন। আমি যখন যা চাই, উনার সামর্থ্য থাকলে উনি না করেন না, যদি আমার চাওয়াটা যৌক্তিক হয়। তাছাড়া আমরা দুজন পৃথিবীর অর্ধেকটা চষে বেড়িয়েছি।
- আমার খুব ভাল লাগছিলো, তাঁর কথার মধ্যে আমার জন্য কোন দুঃসংবাদ এখনো পর্যন্ত ছিলনা। আমি স্বস্তি বোধ করছিলাম, মুখে আমার হাসি লেগেই ছিল। উনি বলে চললেন –
- দেখুন আমরা দুজন মান অভিমান করেছি, নিজেরা আলোচনা করে আবার সেটা মিটিয়েছি। কিন্তু......... কথার এ পর্যায়ে একটু থামলেন আমার স্ত্রী। শ্রোতারা অধির আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছেন। আমার অপেক্ষা তো আরো কয়েকগুণ বেশি। উনি ‘কিন্তু’ বলে চুপ কেন?
- কিন্তু......... শ্রোতাদের মধ্যে থেকে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। এই বুঝি আমার স্ত্রী আমার সম্পর্কে, নিজের সুখ সম্পর্কে এমন কিছু বলবেন যা কেউ আশা করেনি –
উনি মুখ খুললেন।
- কিন্তু আমার স্বামী আমাকে সুখী করতে পারেন না।
- শত জোড়া চোখ তখন আমার দিকে তীর্যক দৃষ্টিতে তাকিয়ে। মনে হলো এই কথা শোনার জন্য কি জীবনের এতটা বছর একসাথে থাকা। এই কথা শোনার আগে কেন আমার মরণ হলো না। শ্রোতারা উনার কাছে ব্যাখ্যা দাবি করলেন। উনি আবার মৃদু হাসলেন, আমার অসহায় চেহারার দিকে তাকালেন। তারপর বলা শুরু করলেন।
- আমার স্বামী আমাকে সুখী করতে পারেন না কারণ সুখী করা উনার কাজ নয়, সুখী হওয়াটা আমার কাজ। আমার স্বামী আমার জীবনকে যতই সাজাতে চান না কেন, আমি যদি আমার মনকে সাজাতে না পারি, আমি নিজে যদি সুখ বোধ না করি, কার সাধ্য আমাকে সুখী করে? সবচেয়ে বড় কথা, আপনাদের সবার সামনে কথাটা পরিষ্কার করা জরুরী। আর তা হলো, আমি খুবই সুখী একজন মানুষ। বোধ করি আমার স্বামীও খুব সুখী। আমরা দুজনেই জানি কিভাবে সুখী হতে হয়”।
- আমি খুব খুশী হয়েছি এমন একটা প্রশ্ন করার জন্য। আমার স্বামী মিঃ রিসম্যান একটু আগে কথা বলে গেলেন। আসলে উনিই এখানে আজ আমন্ত্রিত বক্তা, আমি শ্রোতা হিসেবে এসেছি। আমাকে কিছু কথা বলার সুযোগ দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ। আমার স্বামী আমার দেখা ভালো মানুষদের অন্যতম। তিনি তাঁর জীবনের বড় যেসব সিদ্ধান্ত, আমার সাথে আলাপ আলোচনা করেই নেন, আর্থিক কোন সিদ্ধান্ত নেবার আগে অবশ্যই আমার সাথে পরামর্শ করে নেন। আমি যখন যা চাই, উনার সামর্থ্য থাকলে উনি না করেন না, যদি আমার চাওয়াটা যৌক্তিক হয়। তাছাড়া আমরা দুজন পৃথিবীর অর্ধেকটা চষে বেড়িয়েছি।
- আমার খুব ভাল লাগছিলো, তাঁর কথার মধ্যে আমার জন্য কোন দুঃসংবাদ এখনো পর্যন্ত ছিলনা। আমি স্বস্তি বোধ করছিলাম, মুখে আমার হাসি লেগেই ছিল। উনি বলে চললেন –
- দেখুন আমরা দুজন মান অভিমান করেছি, নিজেরা আলোচনা করে আবার সেটা মিটিয়েছি। কিন্তু......... কথার এ পর্যায়ে একটু থামলেন আমার স্ত্রী। শ্রোতারা অধির আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছেন। আমার অপেক্ষা তো আরো কয়েকগুণ বেশি। উনি ‘কিন্তু’ বলে চুপ কেন?
- কিন্তু......... শ্রোতাদের মধ্যে থেকে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। এই বুঝি আমার স্ত্রী আমার সম্পর্কে, নিজের সুখ সম্পর্কে এমন কিছু বলবেন যা কেউ আশা করেনি –
উনি মুখ খুললেন।
- কিন্তু আমার স্বামী আমাকে সুখী করতে পারেন না।
- শত জোড়া চোখ তখন আমার দিকে তীর্যক দৃষ্টিতে তাকিয়ে। মনে হলো এই কথা শোনার জন্য কি জীবনের এতটা বছর একসাথে থাকা। এই কথা শোনার আগে কেন আমার মরণ হলো না। শ্রোতারা উনার কাছে ব্যাখ্যা দাবি করলেন। উনি আবার মৃদু হাসলেন, আমার অসহায় চেহারার দিকে তাকালেন। তারপর বলা শুরু করলেন।
- আমার স্বামী আমাকে সুখী করতে পারেন না কারণ সুখী করা উনার কাজ নয়, সুখী হওয়াটা আমার কাজ। আমার স্বামী আমার জীবনকে যতই সাজাতে চান না কেন, আমি যদি আমার মনকে সাজাতে না পারি, আমি নিজে যদি সুখ বোধ না করি, কার সাধ্য আমাকে সুখী করে? সবচেয়ে বড় কথা, আপনাদের সবার সামনে কথাটা পরিষ্কার করা জরুরী। আর তা হলো, আমি খুবই সুখী একজন মানুষ। বোধ করি আমার স্বামীও খুব সুখী। আমরা দুজনেই জানি কিভাবে সুখী হতে হয়”।
( লেখাটি আমার প্রকাশিত বই নিমেষেই কোটিপতি থেকে নেয়া।)
স্ত্রী বললেন, 'স্বামী আমাকে সুখী করতে পারেন না, সুখী নিজে হতে হয় ।
Reviewed by FinPowers.Com
on
November 11, 2017
Rating:
No comments: